নামাজের বিধানে বান্দার কি কল্যাণ রয়েছে?
আল্লাহর অশেষ করুনা আমাদের উপর বর্ষিত হচ্ছে এবং আমরা আল্লাহর অফুরন্ত নিয়ামত উপভোগ করছি। তিনি আমাদেরকে উত্তম রিযিক দিয়েছেন, সুস্থতা দান করেছেন, সন্তান ও পরিবার পরিজন দান করেছেন, হায়াত দান করেছেন। তাঁর এই করুণা ও নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা আদায় দুই পদ্ধতির সমন্বয়ে হয়ে থাকে। তার প্রভুত্বকে স্বীকার করে প্রথমতঃ ভাল কাজ ও করুণার স্বীকৃতি মৌখিক নয়, বরং অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে করা এবং উহার প্রমাণ স্বরুপ নম্র ও বিনয়ের সাথে তাঁর জন্য সিজদায় মাথা অবনত করা। দিতীয়তঃ এই নি’আমতগুলিকে সংরক্ষণ করা এবং উহা ঐ ভাবে ব্যবহার করা যেভাবে তিনি পছন্দকরেন। তাই সালাত আদায় করা হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার হুকুমের বাস্তবায়নে অন্তরের নির্মলতা প্রকাশ, তাঁর মহব্বত ও মর্যাদার বহিঃপ্রকাশ। এই সালাত হচ্ছে পরিণামদর্শী সুদৃঢ় কাজ, যার রয়েছে নির্দিষ্ট সময়, বিশেষ এক অবস্থা এবং উন্নত পদ্ধতি। সালাত হচ্ছে ইবাদত সমূহের মধ্যে মূল এবং সর্বোত্তম আনগুত্য। এই সালাত আদায়ে হৃদয় শান্ত হয়, অন্তর সুস্থির হয়, শরীর আরাম বোধ করে, রাগ নিস্তেজ হয়,কু-প্রবৃত্তি দমন হয়। মুসলিমদের মাঝে সম্পকর্ সুদৃঢ় করা, মানুষের মাঝে সমতা ও সমবেদনা আনায়ন করা, আইন শৃংখলা রক্ষা, বিনয়ী শিষ্টাচার ও হক পালনের ব্যাপারে সালাত হচ্ছে আসল হাতিয়ার। এই সালাতের মাধ্যমে বান্দা তার সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহায্য ও শক্তি প্রার্থনা করে, ভাল কাজে তাঁরকাছে মদদ চায়। কঠোর দৃষ্টি অথবা কটু বাক্য অথবা নির্দয়ভাবে শক্তি প্রয়োগে যদি সৃষ্টির কারও প্রতি অনিষ্ট করে থাকে তাহলে ক্ষমা চায়। মানব জীবনে সালাত অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, যেমন প্রয়োজন খাদ্য ও পানীয় বস্তু কেননা খাদ্য ও পানীয় শরীর গঠনের মূল বা প্রধান উপকরণ এবং বেঁচে থাকার উপাদান। আর সালাত হচ্ছে আত্মার প্রকৃত উপকরণ ও শান্তনা পাবার উপাদান। সালাত মানুষের চরিত্রকে সংশোধন করে, জন্মগত অভ্যাসকে পরিবর্তন করে এবং সন্দেহ ও বিশৃংখলাপর্ণূ আদি অভ্যাসের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং তাকে অশ্লীল, নিকৃষ্ট ও ঘৃণিত কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেনঃঅর্থ: নিশ্চয়ই সালাত অশ্লীল ও ঘৃণিত কাজ থেকে বিরত রাখে। (সূরা আনকাবুত, ২৯ঃ ৪৫ আয়াত)।
বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে স্বাস্থ্যগত দিক দিয়েও সালাতের অনেক উপকার রয়েছে যা পবিত্রতা, অযু, মেসওয়াক, দাঁড়ানো, রুকু,সিজদাহ ও বৈঠক থেকে আমরা পেয়ে থাকি। ডাঃ মোহাম্মদ তারেক মাহমুদ উল্লেখ করেননামাজ হল এক উত্তম শরীর চর্চা। অলসতা, বিষনড়বতা ও বে-আমলের এই যগু সন্ধিক্ষণে শুধুমাত্র নামাজই এমন এক ব্যয়াম, যদি একে সার্বিক পদ্ধতিতে আদায় করা হয় তাহলে এর দ্বারা ইহকালীন সকল ব্যথার উপসম সম্ভব। নামাজের ব্যয়াম যেমনভাবে বাহ্যিক অঙ্গ প্রতঙ্গের সৌন্দযর্ বৃদ্ধি করে তেমনি আভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রতঙ্গ যেমন হৃৎপিন্ড, যকৃত, মূত্রাশয়, ফুসফুস, মস্তিস্ক, নাড়িভুড়ি, পাকস্থলী, মেরুদন্ড, গর্দান, সীনা ও সর্ব প্রকার এষধহফং ( দেহের রসগ্রন্থি)আবর্তিত করে শরীরকে সুঠাম ও সৌন্দর্যবান করে তোলে। আর এই ব্যয়ামগুলি এমন যার দ্বারা হায়াত বৃদ্ধি পায়। বৃদ্ধিপায় এক অসাধারণ শক্তি।জনৈক ব্যক্তি (এ, আর কমর) তার ইউরোপ ভ্রমণ কাহিনীতে লিখেছেনঃ একদিন আমি নামাজ আদায় করছিলাম। আমার নামাজ শেষ হলে এক অমুসলিম বিশেষজ্ঞ আমাকে বলতে লাগলঃ ব্যয়ামের এই পদ্ধতি আমার বইয়ে লিখেছি এবং উল্লেখ করেছি, যে ব্যক্তি এ পদ্ধতিতে ব্যয়াম করবে সে কখনো দীঘর্ মেয়াদী মারাত্মক ও জটিল ব্যাধিতে আক্তান্ত হবে না। অতঃপর এর ব্যাখ্যা এভাবে দিল যে, দন্ডায়মান ব্যক্তি যদি তৎক্ষণাৎ ব্যয়ামে গমন করে তাহলে তার সড়বায় ু ও হৃদপিন্ডের উপর এর প্রভাব মঙ্গল জনক হয় না। তাই আমি স্বীয় পুস্তকে এ কথা বিশেষ ভাবে তুলে ধরেছি যে, প্রথমে দাঁড়িয়ে ব্যয়াম করবে তখন হাত বাঁধা বাঞ্ছনীয় (অর্থাৎ কিয়াম) অতঃপর মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে ব্যয়াম করতে হবে। এ ব্যয়াম কেবলমাত্র বিশেষজ্ঞগণই করতে পারবে। তার মন্তব্য শুনে মুসল্লী ব্যক্তি বলতে লাগলঃ আরে! আমি আপনার পুস্তক এখনও পড়িনি; আমি একজন মুসলিম, আমার ইসলামআমাকে এরূপ করার নির্দেশ দিয়েছে। আমি প্রত্যহ কমপক্ষে পাঁচবার এ রকম করে থাকি। এ কথা শুনতেই সেই ইংরেজ ব্যক্তি কিংকর্তব্য বিমুড় হয়ে তার কাছ থেকে ইসলামী জ্ঞান সম্পকের্ ধারণা নিতে লাগল। পাকিস্তানের একজন হৃদপিন্ডের রোগী স্বীয় রোগের চিকিৎসা করাতে অবশেষে যখন অষ্ট্রেলিয়া গিয়ে পৌছলেন তখন সেখানকার একজন হৃদপিন্ড বিশেষজ্ঞ তাকে পর্ণূ পরিদর্শনের পর তার জন্য কিছ ্ ুঔষধ ও একটি ব্যয়াম নির্ধারণ করে দিয়ে বললেনঃ আপনি আমার ফিজিও ওয়ার্ডে আমারই তত্বাবধানে আট দিন পর্যন্ত উক্ত ব্যয়াম করবেন। তাকে ব্যয়াম করানোর পর দেখা গেল তা ছিল খুশু খযু ও সন্তোষজনক এক পর্ণূাঙ্গ নামায। এবার পাকিস্তানী রোগী সেই ব্যয়ামটাকে পরিপর্ণূ ও সঠিক পদ্ধতিতে সহজেই আদায় করতে লাগল। এতদ্দর্শনে ডাক্তার বললেনঃ আপনি আমার প্রথম রোগী যে এত দ্রুত আমার এই ব্যয়ামটা শিখে উত্তমভাবে তা আদায় করতে পারলেন। বস্তুতঃ এখানে আটদিনে রোগী শুধূ এ পদ্ধতিটা শিখে। এ কথা শুনে রোগী বলল, আমি হচ্ছি একজন মুসলিম, আর এ পদ্ধতি হল আমাদের পর্ণূাঙ্গ নামায। তাই এটা শিখতে আমার মোটেই বেগ পেতে হয়নি। অতঃপর দ্বিতীয় দিনেই ডাক্তার তাকে ঔষধ ও ব্যয়াম সম্পকের্ বিশেষ কিছু দিক নির্দেশনা দিয়ে বিদায় দিয়ে দিলেন।
Normal
0
false
false
false
EN-US
X-NONE
X-NONE
/* Style Definitions */
table.MsoNo...
Read more »